চেষ্টায় যেকোনো অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। চেষ্টা করলে সফল হওয়া যায় না এ
কথা বিশ্বাস করি না। চেষ্টা করে সফল হননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম।
চেষ্টা করলে একদিক দিয়ে না হোক, আরেক দিক দিয়ে সাফল্য আসে। কোনো প্রচেষ্টাই
বিফলে যায় না। এটা ধ্রুব সত্য বলে মনে করি।
আপনার কর্মস্থলে আপনি হয়তো দেখছেন, রাতদিন পরিশ্রম করেও পদোন্নতি হচ্ছে না। কিংবা বেতন বাড়ছে না। আপনি খেটে মরছেন আর আপনার একজন কলিগ গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছে। যিনি হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছেন তিনিই অতি মূল্যায়িত হচ্ছে। আপনি এসব দেখে মন খারাপ করছেন। আপনি মনে মনে ভাবছেন, আপনার কাজ কেউ দেখছে না। কেউ আপনাকে মূল্যায়ন করছে না। কী লাভ এতো এতো কাজ করে! সারাক্ষণ গাধার মতো খাটছি, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
কিছু হচ্ছে না বলে কি আপনি কাজকর্ম বন্ধ করে বসে থাকবেন! কাজে ফাঁকি দেবেন? নাকি আরো বেশি বেশি চেষ্টা করে যাবেন? আপনিই চিন্তাভাবনা করে বলেন তো!
অবশ্যই আপনি কাজের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবেন। আপনি আরো বেশি আন্তরিক হবেন। দেখবেন, আপনার প্রতিষ্ঠান আপনাকে মূল্যায়ন না করলেও অন্য প্রতিসমান থেকে এমন অফার পাবেন যা আপনি হয়তো কল্পনাও করেননি। এটাই প্রকৃতির বিচার। প্রকৃতির জাজমেন্ট কিন্তু ভয়ংকর! প্রতিটি মানুষকেই প্রকৃতির বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।
যে মানুষটি কাজে ফাঁকি দিচ্ছে সে কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছে। একটা সময় কাজ তার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। চেষ্টা করেও তখন সে আর কাজকে ধরতে পারে না। কাজ তার কাছে আর ধরা দেয় না। আস্তে আস্তে সে অকাজের লোকে পরিণত হয়। তখন চেষ্টা করেও সে আর নিজেকে কাজের মধ্যে সম্পৃক্ত করতে পারে না। সে তখন ভিন্ন পথ বেছে নেয়। সেই ভিন্ন পথটা কি? সেই পথটি হচ্ছে ফাঁকিবাজ, চাপাবাজ, আর তোষামদকারীর পথ। লোকটির তখন মেরুদণ্ড বলে কিছু থাকে না।
বস হয়তো তাঁকে বকছেন, গালমন্দ করছেন। আর তিনি বসের সামনে হাত কচলাচ্ছেন। বসের বকা শেষ হলে আবার তিনি গা ঝাড়া দিয়ে ওঠেন। এমন ভাব করেন যেন তার কিছুই হয়নি। কিছুক্ষণ বাদেই তিনি স্বরূপে আভির্ভূত হন। তিনি বসকে সন্তুষ্ট করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কোনো কথা বললে বস খুশি হবেন ইনিয়ে বিনিয়ে সেই কথা বলতে থাকেন। আসলে তাদের একটাই কাজ, বসকে খুশি রাখা।
কাজের লোকরা কিন্তু এটা কখনোই করেন না। তারা কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। কাজটাকেই তারা বড় করে দেখেন। আর সেই কাজই তাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কখনো কখনো তিনি লিফটের গতিতে এগিয়ে যান।
একটি কথা মনে রাখতে হবে, বসকে খুশি রাখলে হয়তো সাময়িক সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু তেলবাজি কিংবা তোষামোদি করে খুব বেশি দূর যাওয়া যায় না। বরং তার নিজের জায়গাটাও ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। একটা সময় তাকে চাকরি হারাতে হয়। আর কাজ মানুষকে তার স্বপ্নের সমান বড় করে। কোনো কোনো কাজের মানুষের ক্ষেত্রে এমন ঘটে যে, তার প্রাপ্তি কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যায়।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, ব্যর্থ হলে ভেঙে পড়েন। নতুন করে শুরু করতে চান না। শুরু করতে পারেন না। অথচ আলিবাবার কর্ণধার জ্যাক মা’র কথা চিন্তা করুন। তিনি লেখাপড়ায় ব্যর্থ, চাকরি করতে গিয়ে ব্যর্থ। ব্যবসা করতে গিয়েও বার বার ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। যে জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন সেটাকে তিনি অভিজ্ঞতা হিসেবে ধরে নিয়েছেন। আবার নতুন করে শুরু করেছেন। অনলাইন শপিং স্টোর আলিবাবা করেই তিনি বিশ্বের সেরা ধনীদের একজন হয়ে ওঠেন।
লেখক : মোস্তফা কামাল , সাহিত্যিক ও নির্বাহী সম্পাদক, কালের কণ্ঠ।
আপনার কর্মস্থলে আপনি হয়তো দেখছেন, রাতদিন পরিশ্রম করেও পদোন্নতি হচ্ছে না। কিংবা বেতন বাড়ছে না। আপনি খেটে মরছেন আর আপনার একজন কলিগ গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছে। যিনি হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছেন তিনিই অতি মূল্যায়িত হচ্ছে। আপনি এসব দেখে মন খারাপ করছেন। আপনি মনে মনে ভাবছেন, আপনার কাজ কেউ দেখছে না। কেউ আপনাকে মূল্যায়ন করছে না। কী লাভ এতো এতো কাজ করে! সারাক্ষণ গাধার মতো খাটছি, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
কিছু হচ্ছে না বলে কি আপনি কাজকর্ম বন্ধ করে বসে থাকবেন! কাজে ফাঁকি দেবেন? নাকি আরো বেশি বেশি চেষ্টা করে যাবেন? আপনিই চিন্তাভাবনা করে বলেন তো!
অবশ্যই আপনি কাজের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবেন। আপনি আরো বেশি আন্তরিক হবেন। দেখবেন, আপনার প্রতিষ্ঠান আপনাকে মূল্যায়ন না করলেও অন্য প্রতিসমান থেকে এমন অফার পাবেন যা আপনি হয়তো কল্পনাও করেননি। এটাই প্রকৃতির বিচার। প্রকৃতির জাজমেন্ট কিন্তু ভয়ংকর! প্রতিটি মানুষকেই প্রকৃতির বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।
যে মানুষটি কাজে ফাঁকি দিচ্ছে সে কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছে। একটা সময় কাজ তার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। চেষ্টা করেও তখন সে আর কাজকে ধরতে পারে না। কাজ তার কাছে আর ধরা দেয় না। আস্তে আস্তে সে অকাজের লোকে পরিণত হয়। তখন চেষ্টা করেও সে আর নিজেকে কাজের মধ্যে সম্পৃক্ত করতে পারে না। সে তখন ভিন্ন পথ বেছে নেয়। সেই ভিন্ন পথটা কি? সেই পথটি হচ্ছে ফাঁকিবাজ, চাপাবাজ, আর তোষামদকারীর পথ। লোকটির তখন মেরুদণ্ড বলে কিছু থাকে না।
বস হয়তো তাঁকে বকছেন, গালমন্দ করছেন। আর তিনি বসের সামনে হাত কচলাচ্ছেন। বসের বকা শেষ হলে আবার তিনি গা ঝাড়া দিয়ে ওঠেন। এমন ভাব করেন যেন তার কিছুই হয়নি। কিছুক্ষণ বাদেই তিনি স্বরূপে আভির্ভূত হন। তিনি বসকে সন্তুষ্ট করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কোনো কথা বললে বস খুশি হবেন ইনিয়ে বিনিয়ে সেই কথা বলতে থাকেন। আসলে তাদের একটাই কাজ, বসকে খুশি রাখা।
কাজের লোকরা কিন্তু এটা কখনোই করেন না। তারা কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। কাজটাকেই তারা বড় করে দেখেন। আর সেই কাজই তাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কখনো কখনো তিনি লিফটের গতিতে এগিয়ে যান।
একটি কথা মনে রাখতে হবে, বসকে খুশি রাখলে হয়তো সাময়িক সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু তেলবাজি কিংবা তোষামোদি করে খুব বেশি দূর যাওয়া যায় না। বরং তার নিজের জায়গাটাও ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। একটা সময় তাকে চাকরি হারাতে হয়। আর কাজ মানুষকে তার স্বপ্নের সমান বড় করে। কোনো কোনো কাজের মানুষের ক্ষেত্রে এমন ঘটে যে, তার প্রাপ্তি কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যায়।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, ব্যর্থ হলে ভেঙে পড়েন। নতুন করে শুরু করতে চান না। শুরু করতে পারেন না। অথচ আলিবাবার কর্ণধার জ্যাক মা’র কথা চিন্তা করুন। তিনি লেখাপড়ায় ব্যর্থ, চাকরি করতে গিয়ে ব্যর্থ। ব্যবসা করতে গিয়েও বার বার ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। যে জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন সেটাকে তিনি অভিজ্ঞতা হিসেবে ধরে নিয়েছেন। আবার নতুন করে শুরু করেছেন। অনলাইন শপিং স্টোর আলিবাবা করেই তিনি বিশ্বের সেরা ধনীদের একজন হয়ে ওঠেন।
লেখক : মোস্তফা কামাল , সাহিত্যিক ও নির্বাহী সম্পাদক, কালের কণ্ঠ।
No comments:
Post a Comment