Showing posts with label শঙ্খ ঘোষ. Show all posts
Showing posts with label শঙ্খ ঘোষ. Show all posts

Wednesday, January 22, 2020

বাবুমশাই – শঙ্খ ঘোষ

‘সে ছিল একদিন আমাদের যৌবনে কলকাতা!
বেঁচে ছিলাম ব’লেই সবার কিনেছিলাম মাথা
আর তাছাড়া ভাই
আর তাছাড়া ভাই আমরা সবাই জেনেছিলাম হবে
নতুন সমাজ, চোখের সামনে বিপ্লবে বিপ্লবে
যাবে খোল-নলিচা
যাবে খোল-নলিচা পালটে, বিচার করবে নিচু জনে’
-কিন্তু সেদিন খুব কাছে নয় জানেন সেটা মনে
মিত্র বাবুমশয়
মিত্র বাবুমশয় বিষয়-আশয় বাড়িয়ে যান তাই
মাঝেমধ্যে ভাবেন তাদের নুন আনতে পান্তাই
নিত্য ফুরোয় যাদের
নিত্য ফুরোয় যাদের সাধ-আহ্লাদের শেষ তলানিটুকু
চিরটা কাল রাখবে তাদের পায়ের তলার কুকুর
সেটা হয় না বাবা
সেটা হয় না বাবা’ বলেই থাবা বাড়ান যতেক বাবু
কার ভাগে কী কম প’ড়ে যায় ভাবতে থাকেন ভাবুক
অমনি্ দু’চোখ বেয়ে
অমনি্ দু’চোখ বেয়ে অলপ্পেয়ে ঝরে জলের ধারা
বলেন বাবু ‘হা, বিপ্লবের সব মাটি সাহারা’
কুমীর কাঁদতে থাকে
কুমীর কাঁদতে থাকে ‘আয় আমাকে নামা নামা ব’লে
কিন্তু বাপু আর যাব না চরাতে-জঙ্গলে
আমরা ঢের বুঝেছি
আমরা ঢের বুঝেছি খেঁদীপেচী নামের এসব আদর
সামনে গেলেই ভরবে মুখে, প্রাণ ভ’রে তাই সাধো
তুমি সে-বন্ধু না
তুমি সে-বন্ধু না, যে ধুপধুনা জ্বলে হাজার চোখে
দেখতে পাবে তাকে, সে কি যেমন তেমন লোকে
তাই সব অমাত্য
তাই। সব অমাত্য পাত্রমিত্র এই বিলাপে খুশী
শুঁড়িখানাই কেবল সত্য, আর তো সবই ভূষি
ছি ছি হায় বেচারা’
ছি ছি হায় বেচারা? শুনুন যাঁরা মস্ত পরিত্রাতা
এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা
হেঁটে দেখতে শিখুন
হেঁটে দেখতে শিখুন ঝরছে কী খুন দিনের রাতের মাথায়
আরেকটা কলকাতায় সাহেব আরেকটা কলকাতায়
সাহেব বাবুমশয়।

যমুনাবতী


 নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
 একটু আগুন দে,
 আরেকটুকাল বেঁচেই থাকি
 বাঁচার আনন্দে!
 নোটন নোটন পায়রাগুলি
 খাঁচাতে বন্দী-
 দুয়েক মুঠো ভাত পেলে তা
 ওড়াতে মন দিই!

 হায় তোকে ভাত দেবো কী করে যে ভাত দেবো হায়
 হায় তোকে ভাত দিই কী দিয়ে যে ভাত দিই হায়

 ‘নিভন্ত এই চুল্লি তবে
 একটু আগুন দে,
 হাড়ের শিরায় শিখার মাতন
 মরার আনন্দে!
 দু’পারে দুই রুই কাতলার
 মারণী ফন্দী-
 বাঁচার আশায় হাত-হাতিয়ার
 মৃত্যুতে মন দিই!

 বর্গী না টর্গী না কংকে কে সামলায়
 ধার চকচকে থাবা দেখছো না হামলায়?
 যাস নে ও হামলায় যাসনে!
 কানা কন্যার মায়ের ধমনীতে আকুল ঢেই তোলে- জ্বলে না,
 মায়ের কান্নায় মেয়ের রক্তের উষ্ঞ হাহাকার মরেনা
 চললো মেয়ে রণে চললো!
 বাজে না ডম্বরু অস্ত্র ঝনঝন করে না জানলো না কেউ তা
 চললো মেয়ে রণে চললো!
 পেশীর দৃঢ় ব্যথ, মুঠোর দৃঢ় কথা, চোখের দৃঢ় জ্বালা সঙ্গে
 চললো মেয়ে রণে চললো!

 নেকড়ে-ওজর মৃত্যু এলো
 মৃত্যুরই গান গা-
 মায়ের চোখে বাপের চোখে
 দু’তিনটে গঙ্গা!

 দূর্বাতে তার রক্ত লেগে
 সহস্র সঙ্গী
 জাগে ধ্বক ধ্বক, যগ্গে ঢালে
 সহস্র মণ ঘি!

 যমনাবতী সরস্বতী কাল যমুনার বিয়ে
 যমুনা তার বাসর রচে বারুদ বুকে দিয়ে
 বিষের টোপর নিয়ে!
 যমুনাবতী সরস্বতী গেছে এ-পথ দিয়ে
 দিয়েছে পথ গিয়ে!

 নিভন্ত এই চুল্লিতে আগুন ফলেছে!!

কবি - শঙ্খ ঘোষ

#যমুনাবতী
 এই কবিতাটি কবে পড়েছিলাম তা মনে নেই; তবে কবিতার কথা গুলো মনের সাথে গেঁথে গিয়েছিল। শোষণের বেড়াজালে আবদ্ধ প্রাণের সেই আকুতি ছুঁয়ে গিয়েছিল অবচেতন মনকেও।