করোনা নিয়েই হয় তো এক সময় চারিদিকে খুলবে সব
যে যাই বলোক আর যাই হোক না কেনো,
স্কুল খুলবে,কলেজ খুলবে,খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়,
খুলবে সব আজ বা কাল না হয় অন্য কোন দিন।
কিন্তু সবাই মুখোশে মুখ ঢেকে
সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে,
কেমন করে চলাবে পঠন-পাঠন,
তা একেবারেই স্পষ্ট কেউ নয়।
এটা করা যেতে পারে আবার হতেও পারে,
আপাতত ক্লাসের ছাত্রসংখ্যা কমিয়ে দিয়ে,
সিলেবাসের বোঝা একটু কমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলবে,
হয় তো বা পৃথিবীর নানা দেশে দেশে।
এতে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং কতটা বজায় থাকবে,
সে নিয়ে সন্দেহ অনেকেরই মনে আছে।
একটা নতুন কার্টুন দেখছিলাম,
লকডাউনের পরে বাচ্চাদের স্কুল খুলেছে,
বাচ্চারা সব মুখোশ পরে ক্লাসে এসেছে,
কিন্তু ক্লাসের মধ্যেই লণ্ডভণ্ড সব ব্যবস্থা।
কারো মাস্ক অন্য কেউ নিয়েছে পরে,
আর যার মাস্ক সে দৌড়াচ্ছে তার পেছনে।
কেউ তো মাস্ক দিয়ে নাক-মুখের বদলে ঢেকেছে চোখ,
কারো আবার অভিযোগ, যে অন্য কেউ তার মুখোশ ‘সস্তা’ বলেছে।
এটা নিছকই সোশ্যাল মিডিয়ার কৌতূক বলে উড়িয়ে দেওয়া সহজ নয় কিন্তু।
করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় দুলতে থাকবে অদূর ভবিষ্যতের দুনিয়া।
কিন্তু এ ছাড়া উপায়ই বা কি আছে?
আমেরিকার মতো দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ...
ধরেই নিয়েছে যে প্রথাগত ক্লাসরুমের,
পড়াশুনা চালানো সম্ভব নয় ২০২০ সালে।
অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ভাবতে শুরু করেছে,
২০২১ সালটাও হয়তো এমনই যাবে।
সম্বল তাই সবার স্মর্টফোট, ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট।
করোনা লকডানউ থেকে পড়ানোর স্টাইলটাও
যে ক্রমেই বদলে বদলে যাবে,
প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্রুত গ্রাস করবে,
সে বিষয়ে সন্দেহ কিন্তু কম নয়।
চাই তবো শুভ মুক্তি হোক করোনা থেকে সুন্দর এই পৃথিবীর।
Showing posts with label কবিতা. Show all posts
Showing posts with label কবিতা. Show all posts
Wednesday, June 17, 2020
Friday, June 12, 2020
সেদিনটার অপেক্ষায় - মৌসুমী রে
গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বাজার করার,
বন্ধুকে জড়িয়ে ধরার,
অকারনে হেসে ওঠার,
দৌড়ে বাইরে যাবার
অপেক্ষা আর অপেক্ষা ...
ঘুরে বেড়াতে চাই বাসে, মেট্রোয়,
গ্যালোপিং ট্রেনে বসে স্টেশনে
না থেমে চলার সাক্ষী হব,
রাস্তার ধারের জামা কাপড়ের পশরায়
হঠাৎ একটু কুতূহলী দৃষ্টি দেবো ।
লাফাবো বোল্ডারের ওপর,
গাছের তলায় জিরাবো।
ঝাঁকামুটের মাথায় ঝাঁকি থাক,
টুংটাং আওয়াজে ঠেলাগাড়ি এগিয়ে যাক।
মন্দিরের গলিতে ফুল, মিষ্টি
বিক্রির ব্যস্ততা কতদিন দেখা হয়নি।
ডাবওয়ালার ডাব কাটাও
দেখা হয়নি অনেকদিন।
মাঠে আনন্দে লুটোপুটি করে
মাখবো ধুলো,
সেওপুরি খাওয়ার সময়
আবেশে চোখ বন্ধ করব।
ভিড় রাস্তায় জনঅরণ্যে
মিশে যাবো সেদিন
ভীষণভাবে অপেক্ষায় সেদিনটার ...
সেদিনটার ...।
************.************
মৌসুমী রে
কবি পরিচিতি
কবি মৌসুমী রে পৈতৃক নিবাস বার্নপুর, পশ্চিম বর্ধমান। অধুনা মুম্বাই, মহারাষ্ট্র নিবাসী। স্থানীয় সংবাদপত্রে ফ্রিলান্স সাংবাদিক হিসেবে জীবন শুরু করে বিদ্যালয়ে অংক, অর্থনীতি এবং কম্পিউটার পড়ান। কম্পিউটার প্রোগ্রামারের কাজ করেন চোদ্দ বছর। আপাতত স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে লেখার জগতের সাথে সক্রিয় ভাবে যুক্ত। ফেসবুকে লেখালেখি প্রায় দেড় বছর। নিয়মিত নানান পত্রিকায় কবির লেখা প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন সংস্থা থেকে সম্মান প্রাপ্ত। বাচিক শিল্পী হিসেবেও কাজ করছেন। সখ বই পড়া, আবৃত্তি করা, রান্না করা।
Wednesday, June 10, 2020
এই বেশ আছি - অর্পিতা ঘোষ
দুপুরের রোদে দাঁড়িয়ে বার বার ইচ্ছে হতো,
ছুটে কাছে যেতে...
কুলকুল করে বইতো ফল্গু বুকে,
ইচ্ছে হতো, বদ্ধ পুকুর থেকে বানভাসি হয়ে সমুদ্রে মিশতে
তুমি দেখোনি সে জলের ধারা, পড়োনি মনের কথা,
অধিকারে নেওনি টেনে বাহুপাশে।
আশ্রমের সন্ন্যাসীর মতো তাকিয়ে থাকতে স্নিগ্ধ চোখে।
হেরে গিয়ে, অবাধ্য হওয়ার চেষ্টা করেছি কতবার...
নরম দুচোখে , কি এক অমোঘ আকর্ষণী জাদু !!
ভুলে যেতাম সব ব্যথা।
অভিশপ্ত রাতগুলো থাকতো আঁধারে ঢেকে,
জানালায় দাঁড়িয়ে, শুন্য দৃষ্টি চলে যেত দূর আকাশে
যেখানে, চাঁদ আর জ্যোৎস্না একাকার মিলেমিশে
কত সুখি ওরা, ভালোবাসার আলো ছড়ায় চারিদিকে।
বেলা গড়িয়ে আসে বিকেলের তটে
চৌকাঠ এখনো গন্ডি টেনে বসে,
নেই কোনো শোক, এই আছি বেশ!
মাঝির দেখা নেই,
নদীর ওপারে যাবো,
নেবোনা সাথে কোনো দ্বেষ !!
---------------*-------------- -
অর্পিতা ঘোষ
লেখিকা পরিচিতি:--
অর্পিতা ঘোষের জন্ম নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর শহরে, বসবাস ও করে কৃষ্ণনগরে ।ছোট থেকেই সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ। স্কুলে পড়াশোনা করার পাশাপাশি লেখার ও ঝোঁক ছিল, ছোট থেকেই গল্প কবিতা লেখে,ও ছোটোদের গল্প ছড়া লেখে। বিভিন্ন কাব্য গ্রন্থে , বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকাই , মাসিক পত্রিকায় ও দৈনিক খবরের কাগজে অনেক লেখা প্রকাশিত , বাংলাদেশের পত্রিকা ও দৈনিক কাগজে ও লেখা প্রকাশিত ।
Wednesday, June 3, 2020
মানুষ খুঁজি - অঞ্জনা চক্রবর্তী
'মন' আছে কি তোমার?
বিচ্ছিন্ন পৃথিবীতে
টবের গাছ মুখ থুবড়ে পরে।
একাকিত্ব কান্নায়
সেও খোঁজে মন ... ভালো একটা মন।
যত্ন চাই নরম হাতের স্পর্শ
জল মাটি আদর দিলেই তবে পাবে ফুলের গন্ধ।
মানুষ , আছে কি তোমার একটু সময়
প্রেমে পড়ার?
প্রেমে তো পড়া নয়, প্রেমে যে উন্মুক্ত সোপানে
চরৈবেতি আনন্দে, উর্দ্ধগামী মানবতায়
সোহাগ সান্নিধ্যে সহযাত্রী হয়।
সে প্রেম নয় , শুধু যৌনতায়, শরীর পেতে চায়
সেখানে মানব দানব হয়
ফুল ধর্ষিত অহরহ এমন সভ্যতায়...
প্রেমে ব্যথা জাগায়... মানুষ যে আর মানুষ নয়
হিংস্রতায় , কামুক মনস্তত্ত্বের তকমাতে
ফুলের টব ভেঙে চৌচির, ফুল প্রাণ হারায় ।
মানুষ খুঁজি আমি .... আছে কি মন?
না দৌহিক চাহিদা সর্বক্ষণ !
সুন্দর দৃষ্টি, অনবদ্য সৃষ্টি , কথোপকথনে কৃষ্টি
প্রেম জাগায় মনে , প্রেম পরিস্ফুটিত ঐ টবের গাছে।
অঞ্জনা চক্রবর্তী
|
কবি পরিচয় : অঞ্জনা চক্রবর্তী লিখছেন সেই শৈশব কাল থেকে |ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য চর্চার প্রতি তাঁর অদম্য আগ্রহ |পেয়েছেন উৎসাহ বাবা মা , স্বামী , সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের শিক্ষিকা বিনীতা দত্ত , হামাগুড়ির বন্ধুর স্ত্রী ইউনিভার্সিটিতে কর্মরতা অনুরাধা সরকার , আর পাঠক কুলের কাছ থেকে |ইংরেজি সাহিত্যর মাস্টার ডিগ্রী আর চিরকাল ইংরেজি মাধ্যমের পড়াশোনা ও কর্ম জীবন কাটিয়েও বাংলা সাহিত্যের প্রতি দুর্বলতা আর গোপন নেই |পুরাতন ঘটনা থেকে শুরু করে বর্তমান কালের গতি প্রকৃতি সব কিছুর ছাপ পাওয়া যায় তাঁর কবিতায় |
পড়ুন ভালো লাগবে। ধন্যবাদ। সবার জন্য শুভ কামনা রইলো।
Wednesday, May 27, 2020
আলোক তৃপ্তি - অর্পিতা ঘোষ
অর্পিতা ঘোষ |
রাত আসেনা ঘরে...
পরিযায়ী হয়ে কোথায় হারিয়ে গেছে
ঠিকানা দেয়নি আমায়
সভ্যতাও নিস্তব্ধ নিথর
শুধু গাছেরা জেগে আছে আমার সাথে
ওদের তো নেই কোনো মনখারাপ
তারার আলো গায়ে মেখে কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার অপেক্ষায়,
ভোর হলেই পাপড়ি দেয় মেলে
সকালে সূর্যের সোনালী হাসির সাথে খেলবে,
পাতারা খুশিতে মাতে, ক্লোরোফিল গায়ে মেখে সতেজ হবে বলে।
আমার নেই কোনো অপেক্ষা
প্রতি রাতে একটা করে তারা খসে পরে,
আটপৌরে জীবন মুক্তির কামনায় নিঃশেষ হবে একদিন,
ধীরে ধীরে মাটি হবো, মাটিতে মিশে
কালক্রমে কোনো উদ্ভিদ জন্ম নেবে আমার বুকে,
মনোহর রূপ নিয়ে পাতা আর ফুলে ফুলে ভরবে
দীপ্যমান হয়ে তৃপ্তি পাবো সেদিন
পৃথিবীর কাছ থেকে।
লেখিকা পরিচিতি:--
অর্পিতা
ঘোষের জন্ম নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর শহরে, বসবাস ও করে কৃষ্ণনগরে ।ছোট থেকেই
সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ। স্কুলে পড়াশোনা করার পাশাপাশি লেখার ও ঝোঁক ছিল,
ছোট থেকেই গল্প কবিতা লেখে,ও ছোটোদের গল্প ছড়া লেখে। বিভিন্ন কাব্য
গ্রন্থে , বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকাই , মাসিক পত্রিকায় ও দৈনিক খবরের কাগজে
অনেক লেখা প্রকাশিত , বাংলাদেশের পত্রিকা ও দৈনিক কাগজে ও লেখা প্রকাশিত ।
Friday, May 22, 2020
তোমার বাড়ি যাবো - কামরান চৌধুরী
কোভিড বলে সাথে যাবো, চড়ে তোমার রথে
দু'পা যেতে তিনপা পিছাই, ভয় যে কাটে না
তোমার কাছে যাবো বন্ধু সময়টা ভালো না।
ভয় শঙ্কা যত্রতত্র মুখোশে ঢাকা শহর
তোমার বাড়ি যাবোই, সাথে ফুলের বহর।
বহুদূর যেতে হবে, পথে নেই কোনো গাড়ি
কেমন করে যাবো বলো বন্ধু তোমার বাড়ি।
চৌদিকে করোনা তাই বাইরে যাওয়া মানা
বসেছি দ্বার বন্ধ করে দেয়না যেন হানা।
তবু তোমায় দেখতে চাই, কি করে যে দেখি
দরজা-জানালা সকলে বন্ধ রেখেছে সেকি?
মনের জানালা খুলেছি, বন্ধু তোমার তরে
পথের বাঁধা নেইতো যাবোই তোমার ঘরে।
বসবো পাশে থাকবো সাথে মধু আলাপন
প্রিয় সাথে কাটবে সময় নেই জ্বালাতন।।
২৩ মে, ২০২০ ।। শ্যামলী, ঢাকা ।।
Saturday, May 16, 2020
গাছটাও মরে গেছে - কবি শাহিনা খাতুন
যে দুঃখ পেয়েছে ঐ বুড়ো বটগাছ
তার নিরাময় কী
যে বাউল দুমুঠো ভাত চায়নি কোনদিন
তবুও মনের আনন্দে গান গেয়ে হেঁটে গেছে
তার লম্বা চুল অথবা খোঁপার ভেতর
কী এমন ভয় ছিল বলতে পার?
উত্তর জানা নেই
আহারে বকুলের ফুল!
তুমি শুকিয়ে যাওয়ার পরও গন্ধ বিলাও।
শীর্ণা নদীর ধারে কেঁদেছে পথিক
তার কোন ঘর নেই।
মহাজন মাথা গুনে নিয়ে গেছে তিনবার
মরে যাবার ভয়ে আড়াল খুঁজে নেওয়া
গাছটাও মরে গেছে
আজ সবটুকু নালিশ আমার নদীর কাছে
ও আমার পদ্মা নদী তুমি কি পদ্মাবতী?
নাকি আমার মা
সেবার কর্কট রোগে মা চলে গেছে
তারপর কতদিন মা বলে ডাকিনি
আজ মা বলে ডেকে ডেকে পরান জুড়াবো
আমার ভালবাসার খবর রাখেনা কেউ
কোন এক মহাকাব্যের পাতায়
আমার ভালবাসার কথা লিখে রেখো।
তার নিরাময় কী
যে বাউল দুমুঠো ভাত চায়নি কোনদিন
তবুও মনের আনন্দে গান গেয়ে হেঁটে গেছে
তার লম্বা চুল অথবা খোঁপার ভেতর
কী এমন ভয় ছিল বলতে পার?
উত্তর জানা নেই
আহারে বকুলের ফুল!
তুমি শুকিয়ে যাওয়ার পরও গন্ধ বিলাও।
শীর্ণা নদীর ধারে কেঁদেছে পথিক
তার কোন ঘর নেই।
মহাজন মাথা গুনে নিয়ে গেছে তিনবার
মরে যাবার ভয়ে আড়াল খুঁজে নেওয়া
গাছটাও মরে গেছে
আজ সবটুকু নালিশ আমার নদীর কাছে
ও আমার পদ্মা নদী তুমি কি পদ্মাবতী?
নাকি আমার মা
সেবার কর্কট রোগে মা চলে গেছে
তারপর কতদিন মা বলে ডাকিনি
আজ মা বলে ডেকে ডেকে পরান জুড়াবো
আমার ভালবাসার খবর রাখেনা কেউ
কোন এক মহাকাব্যের পাতায়
আমার ভালবাসার কথা লিখে রেখো।
সময় চুরি - কামরান চৌধুরী
কবি - কামরান চৌধুরী |
কাজের মাঝে লুকিয়ে থাকে আনন্দ অসীম
নিজেকে বিলিয়ে দাও জীবন বড় সসীম।
সময়কে অবহেলা করো না, মুক্তি পাবে না
তার সাথে ভাসিয়ে গা, মানিক তুলে আনো না।
নিজেকে বিলিয়ে দাও জীবন বড় সসীম।
সময়কে অবহেলা করো না, মুক্তি পাবে না
তার সাথে ভাসিয়ে গা, মানিক তুলে আনো না।
কত যে সময় চুরি হয়ে যায় জীবনের
রাখিনা হিসাব তার পথ চলি মরণের।
যখনই ভাঙে ভুল দু’চোখে দেখিনা কূল
দুঃখ বিলাস করি, করি না যে, তা নির্মূল।
পৃথিবীর রূপ রস গন্ধ যেন রে অনন্ত
ডুব দিয়ে তার মাঝে সুখ মাখো প্রাণবন্ত।
উদাসীন প্রবাহে যে চলতে চায় জীবন
সময়ের রশি দিয়ে বেঁধে রাখো আমরণ।
যা কিছু প্রাপ্তি, অর্জন আর সফলতা শান্তি
সময়কে কাজে বেঁধে, নাও সে স্বাদ প্রশান্তি।
১৬ মে, ২০২০।। শ্যামলী, ঢাকা।
রাখিনা হিসাব তার পথ চলি মরণের।
যখনই ভাঙে ভুল দু’চোখে দেখিনা কূল
দুঃখ বিলাস করি, করি না যে, তা নির্মূল।
পৃথিবীর রূপ রস গন্ধ যেন রে অনন্ত
ডুব দিয়ে তার মাঝে সুখ মাখো প্রাণবন্ত।
উদাসীন প্রবাহে যে চলতে চায় জীবন
সময়ের রশি দিয়ে বেঁধে রাখো আমরণ।
যা কিছু প্রাপ্তি, অর্জন আর সফলতা শান্তি
সময়কে কাজে বেঁধে, নাও সে স্বাদ প্রশান্তি।
১৬ মে, ২০২০।। শ্যামলী, ঢাকা।
Thursday, May 14, 2020
দৃশ্যান্তর - অর্পিতা ঘোষ
১.
নিক্কণের তালে ঘুরে বেড়াতাম তখন...
দুচোখে স্বপ্ন মাখামাখি ভিড় করে আসতো হাজার,
আদরের আছিলায়, অচেনা চোখ দেখেছি বার বার।
মানে বোঝেনি তখন মন,
তবুও পালিয়ে যেতাম দূরত্বে...
স্মৃতিগুলো বন্দি এখনো নীল খামে,
বদলায়নি কিছুই, চারিদিকে বর্ণচোরার রূপ ধরে–
গন্ধ ছড়ায় আঁষটে।
২.
আকাশী রঙের আঁচল ওড়ে বাতাসে,
তানসেন হতে ইচ্ছে জাগে মনে–
গুনগুনিয়ে সুর তুলি চৌকাঠে বসে,
কান্নার আওয়াজ হয়ে যায় কখন, সুর বদলে
কোনো বৃষ্টির মেঘ আসেনা ভেসে...
দেউড়িতে চাপা পড়ে আছি, মাটির অতলস্পর্শে।
তবুও যদি আসে, পারবেনা ভেজাতে
অর্পিতা ঘোষ |
লেখিকা পরিচিতি:- অর্পিতা ঘোষের জন্ম নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর শহরে, বসবাস ও করে কৃষ্ণনগরে ।ছোট থেকেই সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ। স্কুলে পড়াশোনা করার পাশাপাশি লেখার ও ঝোঁক ছিল, ছোট থেকেই গল্প কবিতা লেখে,ও ছোটোদের গল্প ছড়া লেখে। বিভিন্ন কাব্য গ্রন্থে , বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকাই , মাসিক পত্রিকায় ও দৈনিক খবরের কাগজে অনেক লেখা প্রকাশিত , বাংলাদেশের পত্রিকা ও দৈনিক কাগজে ও লেখা প্রকাশিত ।
পারিব না - কালীপ্রসন্ন ঘোষ
‘পারিব না’ একথাটি বলিও না আর,
কেন পারিবে না তাহা ভাব একবার;
পাঁচজনে পারে যাহা,
তুমিও পারিবে তাহা,
পার কি না পার কর যতন আবার
একবার না পারিলে দেখ শতবার।
পারিবে না বলে মুখ করিও না ভার,
ও কথাটি মুখে যেন না শুনি তোমার।
অলস অবোধ যারা
কিছুই পারে না তারা,
তোমায় তো দেখি নাক তাদের আকার
তবে কেন ‘পারিব না’ বল বার বার ?
জলে না নামিলে কেহ শিখে না সাঁতার,
হাঁটিতে শিখে না কেহ না খেয়ে আছাড়,
সাঁতার শিখিতে হলে
আগে তবে নাম জলে,
আছাড়ে করিয়া হেলা ‘হাঁট’ আর বার;
পারিব বলিয়া সুখে হও আগুসার।
Tuesday, May 12, 2020
লুটেরা - কামরান চৌধুরী
একে একে সব এলাকা করছে গ্রাস।
খাদ্য প্রাপ্তির আশায় অপেক্ষায় মন
ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব গোপন ক্রন্দন।
কর্মহীন জন অনাহারে অর্ধাহারে
অসাধুরা কিভাবে তাদের খাদ্য কাড়ে।
ক্ষুধার্ত মানুষের ঘরে-বাইরে ভয়
দেখি সুবিধাবাদির নৈতিকতা ক্ষয়।
মজুতদারী ও মুনাফালোভীর দল
দেখেছি তোদের লোক দেখানোর ছল।
নিরন্ন মানুষের কেড়েছিস যে খাদ্য
জীবন তোদের হবেই হবে রে শ্রাদ্ধ।
অপরের ধন লুটে হবি তুই বড়?
নরকাগ্নিতে নিত্য জ্বলে পুড়েই মরো ।।
বনলতা সেন - জীবনানন্দ দাশ
হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে , ‘এতোদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে — সব নদী- ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
---বনলতা সেন
Monday, April 27, 2020
Friday, April 17, 2020
দর্শন বিহনে - কামরান চৌধুরী
কতদিন রাখিনি চোখ ঐ মিষ্টি দুটি চোখে
কতদিন রাখিনি হাত তোমার প্রিয় হাতে|
অবাক চাহনি হারিয়ে যায় সে পাখা মেলে
ফিরে পাব প্রাণ কফির আড্ডায় সুন্দর বিকেলে।
অব্যক্ত কথারা গোলাপ কুঁড়িতে প্রস্ফুটিত
ছুটে চলা চঞ্চল কিশোরী হরিনীর ন্যায়
ছটফট করি যেন প্রিয় সঙ্গ কামনায়
আর তুমি অবহেলা করে সরে সরে যাও।
রংধনু ছুঁতে, কৃষ্ণচূড়ায় রঙ মাখাতে
হাসিতে লাগানো বিদ্যুৎ চমক মেঘে ঢাকে।
বৈশাখী ঝড় শেষে আসবে শীতল বাতাস
অধরা তোমাকে কাছে ধরার পাবে প্রয়াস
চেনা অচেনা পথের তৃণ স্বাগত জানাবে
বিবর্ণ মলিন শহরটা প্রাণ খুঁজে পাবে।
আর কতদিন অপেক্ষায় প্রহর গুণবো
আর কত পূর্ণিমা অমাবস্যা পেরোতে হবে
কতটা ঋতু পেরিয়ে যাবে দর্শন বিহনে
আতঙ্কে আতঙ্কে কাটবে আমাদের জীবন।
জং ধরা শরীরের গাঁটে গাঁটে ধরে ব্যথা
ঘুচে যাবে কবে সামাজিক দূরত্বের বেড়া??
১৭ এপ্রিল, ২০২০ ।। শ্যামলী, ঢাকা
Monday, April 13, 2020
বর্ষবরণ - কামরান চৌধুরী
অদৃশ্য শত্রুরা ঘুরছে চৌদিকে
নতুন বর্ষ যে দাঁড়িয়ে চৌকাঠে।
বিবর্ণ মলিন ভয়ার্ত ধরণী
ভুলিনি তবুও বঙ্গাব্দ বরণী।
ভয়কে আমরা করবো যে জয়
বাঙালি নিয়েছে শপথ অভয়।
গৃহ মাঝে গড়ি আনন্দ ভূবন
মনে মনে সেথা অনিন্দ্য কানন।
মৃত্যু-ক্ষুধা-মন্দা, হৃদয় সুগন্ধা
উৎসব মুখর সকাল সন্ধ্যা।
নিয়েছি শপথ আনবো সুদিন
মায়ের, জাতির, বন্ধনের ঋণ।
আমন্ত্রণটা ভাই রইলো তোলা
শত্রু গেলে এসো, দুয়ারটা খোলা।
মিষ্টি পিঠা পুলি পায়েষ সেমাই
মিলবো আবার আড্ডায় সবাই।
দুরত্ব ঘুচুক তোমার আমার
অসুর নিধনে মিলবো এবার।
নব আলোতে অন্ধকার কাটুক
মঙ্গল সুরেতে ভূবন দুলুক।
১ বৈশাখ, ১৪২৭ ।। ১৪ এপ্রিল ২০২০ শ্যামলী, ঢাকা।
নববর্ষে পাই যেন এক নতুন পৃথিবী - বিনিতা দত্ত
বিবর্ণ রঙে এসেছো তুমি হে বৈশাখ
ঘরে ঘরে আজ নেই কোন
নতুনের আহ্বান
শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা মৃত্যুর
মাঝে প্রলয়ের ডাক।
মনের আশা দেখবে আবার নতুন
সকাল ভৈরবী সুরে
শুদ্ধ হয়ে মেতে উঠুক পৃথিবী
আবার নানা রঙের খেলায়
সেদিন সকলে মিলে গাইবো
এসো হে বৈশাখ ঘরে ঘরে।
দূষিত আজ বায়ু,জল ,প্রকৃতি
ও মানুষের মন
তাইতো আজ গোটা বিশ্ব কে
করেছে গ্রাস মরণ রোগ
নতুন বছরের প্রার্থনা দ্রুত
আরোগ্য পাক এই ভুবন।
চারিদিকে শুধু মৃত্যু মিছিল
আর ক্ষুধার্তদের হাহাকার
বিজ্ঞান ও গেছে হেরে আজ
এই ভয়ানক মৃত্যুর কাছে
এই বিশ্বযুদ্ধ দ্রুত শেষ হয়ে
ফিরিয়ে দিক সুদিন সবার।
গৃহবন্দী আজ সকলে মুক্তির
অপেক্ষায় কাটছে দিন
প্রকৃতির সাথে বন্ধ হোক
অবিচার ও অবহেলা
দূষণ মুক্ত এক নতুন পৃথিবী
দেখবো আবার সেইদিন ।।
Thursday, April 9, 2020
অতঃপর একটাই চূড়ান্ত আক্ষেপ আমার
মোঃ কামরুজ্জামান বাবু |
একটাই আক্ষেপ আমার - কারো ভাবনা হতে পারিনি ;
একটাই প্রাপ্তি আমার - কেউ ভাবনা হতে পেরেছে ।
একটাই কষ্ট আমার - কারও ভালো বন্ধু হতে পারিনি;
একটাই সুখ আমার - কখনো কারো নিঃসঙ্গতায় ঠাই পেয়েছি।
একটাই অবসাদ আমার - স্বর্ণালী সুযোগ হেলায় ছুঁড়েছি ।
একটাই শ্রান্তি আমার - তবুও বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছি ।
একটাই বিষাদ আমার - তাকে ধরে রাখতে পারিনি ;
ছোট ছোট শব্দেই তাকে বেলা-অবেলা
হেলা-ফেলা , আগলে রাখতে ছুঁইয়ে দিতাম
বর্ষার সিক্ত কদমের সাদা হুল পাঁপড়ি ,
অতঃপর একটা পলক ওর দীঘিজল চোখে -
বলেছিলাম,ওকে সমুদ্রজল দেখাবো,পাহাড়,
ঘাসফুল,কাশফুল , ঘাসফড়িঙ আর এই-সেই ,
পৃথিবীর সব দেখাবো ,সব-ই ।
ও খিলখিল হেসে বলেছিল ,
"এক রত্তিও মিথ্যে নয় সোনা আমার ,
আমি সব-ই দেখেছি।
একটাই প্রশ্ন আমার - ও কী তবে সান্ত্বনা দিয়েছিলো ?
ও কী অনেক আগেই টের পেয়ে গিয়েছিল ওর মৃত্যু ?
ওর রেখে যাওয়া চিঠি,"এই,আমার হাতের এলোমেলো
লিখা পড়তে গিয়ে বকো না।যা বলছি,মন দিয়ে শুনে নাও
শব্দের শব্দে।আমি তোমার চোখে যে অপলক চেয়ে চেয়ে
সমুদ্র দেখেছি , আমি ঢেউয়ে ভেসেছি সত্যি ,জানো ?
ঘাসফুল , কাশফুল , বুনোফুল , আকাশ -আরো কতো !!
তোমাকে ভালবাসতে বাসতে আর এতকিছু একসাথে
দেখে স্রষ্টার সৃষ্টিকে তুচ্ছ করার সাহস আমার হয়নি যে !
একটাই দোষ আমার - তাকে ভালবাসতে পারিনি । বুঝিনি ।
একটাই স্বীকারোক্তি আমার-আমি আমার সুখের সুখকে মূল্য দেই নি।
অতঃপর একটাই চূড়ান্ত আক্ষেপ আমার - এভাবেই প্রাপ্তি , কষ্ট , সুখ ,
অবসাদ , শ্রান্তি , বিষাদ , প্রশ্ন , দোষ আর
স্বীকারোক্তিতেই আবদ্ধ থেকে যেতে হবেই ।
আমার তো পৃথিবীই মৃত ।
কবি- মোঃ কামরুজ্জামান বাবু
Subscribe to:
Posts (Atom)