Showing posts with label কামরান চৌধুরী. Show all posts
Showing posts with label কামরান চৌধুরী. Show all posts

Saturday, May 30, 2020

যদি চলে যাই - কামরান চৌধুরী

যদি চলে যাই, ভুলেই যাবে কি প্রিয়
কত ভালোবাসা কত কত কথামালা
হাতে হাত রেখে ছুঁয়ে থাকা দিনগুলি
দূরে চলে গেলে, সব ভুলে যাবে নাকি?

তারা ভরা রাতে, জোনাকির সাথে মিশে
পূর্ণিমার রাতে আলোর সাগরে ভেসে
বর্ষা দিনে ভিজে, জানালার পাশে বসে,
শিশিরে আবৃত দূর্বা দুই পায়ে দলেদলে।
বসন্ত বাতাসে মেঠোপথে হেঁটেহেঁটে
সিন্ধু নদী গিরি দেখেছি যে ঘুরে ঘুরে।
সব ভুলে যাবে? চির সখা, প্রিয়তম।
খুঁজে নেবে তুমি, কাউকে আমার সম?

যদি চলে যাই তখনো ফুটবে ফুল
সুগন্ধি বাতাসে এলোমেলো করে চুল।
সূর্য ওঠা ভোরে বাতাসে দোলাবে দুল
কত ভালোবাসি? খুঁজবে নদীর কূল।

যদি চলে যাই তখনো আসবে শীত
উষ্ণ আলিঙ্গনে শোনাবে মধুর গীত?
তখনো হাসবে? উড়ায়ে আঁচল শাড়ি
পায়েতে নুপূর ছন্দ তুলে যাবে বাড়ি?
ভ্রমরা গুঞ্জনে সর্ষে ক্ষেতে যাবে ছুটে
হৃদয়ে বাঁধন কোথায় যাবে রে টুটে।
গাছের ছায়ায় পাখির গানের সুরে
খুঁজে পাবে প্রিয় পথভোলা পথিকেরে।

যদি চলে যাই, ভুলেই যাবে কি প্রিয়
আগামীর পথে, সাথে করে নিয়ে যেয়ো।।।

৩০.০৫.২০২০।। শ্যামলী, ঢাকা।

Wednesday, May 27, 2020

স্বপ্ন ভেলা - কামরান চৌধুরী

কামরান চৌধুরী
 
আবার কবে আসবে ফিরে, সুখের সেসব দিন
ফিরিয়ে দেবো ভালোবাসার, অনন্ত সুখের ঋণ।

কোভিড এসে সম্পর্ক মাঝে, ধরিয়ে দিল যে চিড়
হঠাৎ আঁকে দূরত্ব রেখা, বিষম মনের তীর।

ছিল মধুর ভালোবাসায়, একান্ত আপন কাছে
আক্রান্ত হবার ভয়েভয়ে, আসে না সে আর পাছে।

রূপালী আকাশে মেঘভেলা নিরবে ভেসেই যায়
বৃষ্টি এসেই মনের ঘরে শত কান্নাতে ভাসায়।

তুমিও সুস্থ আমিও সুস্থ, তবু মন যে মানে না
মৃত্যু আশঙ্কায় বুক কাঁপে, কিছুই ভালো লাগে না।

তোমার সাথে পূর্ণ আকাশ দেখিনি সে কতকাল
তিমির রাত পার হয়ে কি, আসবে নব সকাল?

সীমান্ত দ্বার খুলেই যাবে, মুছে যাবে ভয়-ভীতি
শুনবো কি চির পরিচিত তোমারই কণ্ঠ গীতি?

ফুল বাগানে হারিয়ে যাবো পাখিদের কলরবে
স্পর্শ হাসিতে উতলা মন, বুকের ঘরে ফিরবে।

স্বপ্ন ভেলায় ভেসে দু’জন, নিসর্গ সুখ মাখাবো
বিরহ শেষে মিলন সুখে জীবনটাকে সাজাবো।।

২৭.০৫.২০২০ ।। শ্যামলী, ঢাকা।

Sunday, May 24, 2020

ঈদে আত্মশুদ্ধি - কামরান চৌধুরী

আকাশে বাতাসে আনন্দ কনারা আবির মাখিয়ে যে যায়
রমজান শেষ হলেই, মুমিন হৃদয় খুশিতে হারায়।
আনন্দ বার্তায় ফিরে ফিরে আসে, সে মুসলমানের দ্বারে
অনুগ্রহ নিয়ামত দু’হাতে স্রষ্টা, ভরিয়ে দেন বান্দাকে।

হিংসা-দ্বেষ ভুলে, সাম্য-প্রীতির বন্ধনে কোলাকুলি করে
খুশি মনে সবাই যেন, ভালোবাসার সেতুবন্ধন গড়ে।
ঈদে মুসলিম জাহানে ধনী নির্ধনে নেই খুশির শেষ
বৃদ্ধ শিশু নারী পুরুষের নতুন পোশাকে লাগে যে বেশ।

যদিও পেটে নেই গরিবের দু’বেলা অন্নের সংস্থান
তবুও কেউ দ্যাখে না চেয়ে, তাদের দীন-হীন অবস্থান।
বছর ঘুরে, সিয়াম সাধনা শেষে, ঈদ আসে, ঈদ যায়
কয়লা ধুলে যায় ময়লা? মানব চরিত্রও কি পাল্টায়!

ত্যাগ তিতিক্ষা হয় কি অবসান, রুদ্ধ জানালা মানবের,
আজ খুলে দিই কপাট, মুক্ত বায়ু, মুক্ত আলো প্রবেশের।
বাঁকা চাঁদের হাসি দেখে, চোখে-মুখে তৃপ্ত খুশি মুমিনের
আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে মুছে যাবে মলিনতা জমিনের।

স্বপ্নটাকে ছড়িয়ে দিই, দুঃখের মেঘও সরিয়ে দিই
বুকে টেনে নিই সব মানুষে, খোদার প্রেম বুকেতে নিই;
আজ বিভেদ ভুলে, ঘষে মুছে আত্মাকে করবো ভাই স্বচ্ছ
দেখবে বিশ্ব মুসলিমের আলোকিত সমৃদ্ধ দ্বীপগুচ্ছ।

চলো যাই, সবাই মিলে, একে অন্যের মুখে হাসি ফোটাই।।

শ্যামলী, ঢাকা।।

Friday, May 22, 2020

তোমার বাড়ি যাবো - কামরান চৌধুরী


 
তোমার বাড়ি যাবো বলে বের হয়েছি পথে
কোভিড বলে সাথে যাবো, চড়ে তোমার রথে
দু'পা যেতে তিনপা পিছাই, ভয় যে কাটে না
তোমার কাছে যাবো বন্ধু সময়টা ভালো না।

ভয় শঙ্কা যত্রতত্র মুখোশে ঢাকা শহর
তোমার বাড়ি যাবোই, সাথে ফুলের বহর।
বহুদূর যেতে হবে, পথে নেই কোনো গাড়ি
কেমন করে যাবো বলো বন্ধু তোমার বাড়ি।

চৌদিকে করোনা তাই বাইরে যাওয়া মানা
বসেছি দ্বার বন্ধ করে দেয়না যেন হানা।
তবু তোমায় দেখতে চাই, কি করে যে দেখি
দরজা-জানালা সকলে বন্ধ রেখেছে সেকি?

মনের জানালা খুলেছি, বন্ধু তোমার তরে
পথের বাঁধা নেইতো যাবোই তোমার ঘরে।
বসবো পাশে থাকবো সাথে মধু আলাপন
প্রিয় সাথে কাটবে সময় নেই জ্বালাতন।।

২৩ মে, ২০২০ ।। শ্যামলী, ঢাকা ।।

Wednesday, May 20, 2020

আম্পান -কামরান চৌধুরী


চলেই গেল আম্পান
কেড়ে নিয়ে কতপ্রান,
থেমে গেল চলাচল
ভেসে গেল নিম্নাঞ্চল। 

ঝড়ো বায়ু ভারি বৃষ্টি
দেশে করে ত্রাস সৃষ্টি।
পড়ে গেলো গাছপালা
লোনা পানি করে খেলা।

করোনার শত ভয়
ক্ষণিকেই শঙ্কা ক্ষয়।
মৌসুমের যত ফল
লুটোপুটি বৃক্ষতল।
নিরাশ্রয় মানুষেরা
ঈশ্বরে প্রার্থনা ঘেরা।
চলেই গেল আম্পান
কেড়ে নিয়ে কতপ্রাণ।
বুকফাটা আর্তনাদ
মুছে দেয় স্বপ্নসাধ।
প্রকৃতির অনাসৃষ্টি
স্থির উদাসীন দৃষ্টি।
শান্ত এখন প্রকৃতি
উদ্ধার ত্রাণের গতি।।

২১ মে, ২০২০।। শ্যামলী, ঢাকা।

Saturday, May 16, 2020

সময় চুরি - কামরান চৌধুরী


কবি - কামরান চৌধুরী

কাজের মাঝে লুকিয়ে থাকে আনন্দ অসীম
নিজেকে বিলিয়ে দাও জীবন বড় সসীম।
সময়কে অবহেলা করো না, মুক্তি পাবে না
তার সাথে ভাসিয়ে গা, মানিক তুলে আনো না।
কত যে সময় চুরি হয়ে যায় জীবনের
রাখিনা হিসাব তার পথ চলি মরণের।
যখনই ভাঙে ভুল দু’চোখে দেখিনা কূল
দুঃখ বিলাস করি, করি না যে, তা নির্মূল।
পৃথিবীর রূপ রস গন্ধ যেন রে অনন্ত
ডুব দিয়ে তার মাঝে সুখ মাখো প্রাণবন্ত।
উদাসীন প্রবাহে যে চলতে চায় জীবন
সময়ের রশি দিয়ে বেঁধে রাখো আমরণ।
যা কিছু প্রাপ্তি, অর্জন আর সফলতা শান্তি
সময়কে কাজে বেঁধে, নাও সে স্বাদ প্রশান্তি।


১৬ মে, ২০২০।। শ্যামলী, ঢাকা।

Tuesday, May 12, 2020

লুটেরা - কামরান চৌধুরী

কামরান চৌধুরী
 
করোনা ভাইরাস চৌদিকে গড়ছে ত্রাস
একে একে সব এলাকা করছে গ্রাস।
খাদ্য প্রাপ্তির আশায় অপেক্ষায় মন
ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব গোপন ক্রন্দন।
কর্মহীন জন অনাহারে অর্ধাহারে
অসাধুরা কিভাবে তাদের খাদ্য কাড়ে।
ক্ষুধার্ত মানুষের ঘরে-বাইরে ভয়
দেখি সুবিধাবাদির নৈতিকতা ক্ষয়।

মজুতদারী ও মুনাফালোভীর দল
দেখেছি তোদের লোক দেখানোর ছল।
নিরন্ন মানুষের কেড়েছিস যে খাদ্য
জীবন তোদের হবেই হবে রে শ্রাদ্ধ।
অপরের ধন লুটে হবি তুই বড়?
নরকাগ্নিতে নিত্য জ্বলে পুড়েই মরো ।।

Saturday, May 9, 2020

জেগে আছে অদৃশ্য শত্রুরা ।। কামরান চৌধুরী

কবি:- কামরান চৌধুরী

আমার লেখা পড়ার জন্য জানি উন্মুখ হয়েই থাকো
তবু অজানা এক শঙ্কায় নিয়ত আবিষ্ট যেন মন।
অদৃশ্য এক ভাইরাস রাজত্ব করছে এ পৃথিবীতে
ক্রমে ক্রমে করছে গ্রাস নগর-গ্রাম পথ-প্রান্তর।
আকাশে-বাতাসে জলে-স্থলে তার সেকি আগ্রাসী দাপট
বিশ্ব জয়ী মানুষকে আজ গৃহবন্দী করে ছেড়েছে সে।
বিশ্ব মোড়লেরা হতাশায় উদ্ভ্রান্তের ন্যায় ছুটে যায়
অদৃশ্য শত্রুর আঘাতে সে নিরুপায় নিশ্চল নিশ্চুপ।
তোমাকে দেখিনা কতদিন জানিনা কেমন আছো তুমি
মনে হয় পাখি হয়ে উড়ে যাই, তোমার মনের সীমানায়।
বিবর্ণ নগর ছেড়ে দিই, ছুটে যাই প্রকৃতির কোলে
সবুজ যেথা মেলেছে ডানা নীল আকাশের ছায়ে ছায়ে।
নীল শাড়ি পড়ে, হাতে রেশমি চুঁড়ির রিনিঝিনি শব্দে
উতলা মন ছুঁয়ে ছুঁয়েই আছড়ে পড় এ বেলাভূমে।
বুক ঘরে মাথা রেখে তুমি, শুনতে পাও নিশ্চুপ কান্না?
আলতো পরশে দেখো নেড়ে আঙুলের হীরা চুনী পান্না।
দরজা জানালা বন্ধ রেখে, খুলে দাও মনের জানালা
ফাগুনে ফুল ফোটাবো সেথা, স্পর্শ যাদুতে বসন্ত দোলা।

চাঁদ মেঘে লুকোচুরি খেলে, দেহের মাঝে চুম্বন তোলে
সহসা কম্পন থর থর, বুকের ঘরে আগলে রাখো।
আসবে সুদিন স্মৃতি রেখে, অদৃশ্য শত্রু যাবে পালিয়ে
থাকে প্রেম অন্তরে অন্তরে বাহুতে বাহুতে মিশে মিশে।

রাতের আকাশে তারারা যেমন ঘুমায় হেলান দিয়ে
তেমনি করে আমার বুকে ঘুমাবে নিশ্চুপ নিরাপদে।
জেগে আছে অদৃশ্য শত্রুরা, তুমি একটু অপেক্ষা করো
আসছি তোমার কাছে কাছে, দেবো নিরাপদ নীড় জেনো।। 


৯.০৫.২০২০।। শ্যামলী, ঢাকা।

Monday, April 27, 2020

নোঙর - কামরান চৌধুরী

কামরান চৌধুরী

প্রতিটি সুস্থতা যেন নতুন জীবন দেয়
জেগে জেগে উঠি যেন নবতেজোদীপ্ত হয়ে।
ফসলের মাঠ ভাসে যেন সবুজ বন্যায়
কৃষাণের চোখে চোখে সোনালী স্বপ্ন ফোয়ারা।
প্রতিটি সুস্থতা যেন জাগিয়ে তোলে মনন
নবত্বের ভাবনায় নব দিশায় সাজায়।
যা কিছু ছোঁয়া হয়নি, যে স্বপ্ন দেখা হয়নি
নরম স্পর্শে জাগেনি শিশিরাবৃত অঞ্চল।

লাজে রাঙা ওষ্ঠ মাঝে চুম্বন আঁকা হয়নি।
প্রতিক্ষিত স্বপ্নগুলো আজও হয়নি বোনা।
কচি হাত ধরে ধরে হাঁটিনি চেনা শহর
নতুন প্রাণে দেখবো স্বপ্নের সেই শহর।

ভাস্কোদাগামা কলম্বাস মেগানলেস হয়ে
আবিস্কারের নেশায় উন্মত্ত এক নাবিক।
নতুন পথেই চলা নতুন সারথি নিয়ে
অনন্ত পথিক হয়ে, অনন্তের সাথে ছোটা।।

বারংবার মৃত্যু থেকে বেঁচে ফিরতে চাই
ডুবে যাবার আগে ঝাড়া মেরে উঠতে চাই।
সুন্দর এই পৃথিবী, চাইনা যেতে কোথাও
মিলেমিশে একাকার চারদিকে স্বপ্নাধার।

সকালের মিঠারোদ, কলাপাতা ঘেরা ছায়া
কচি কচি লাউডগা, মাঠভরা সর্ষে হাসি
ঘাসফরিং, চড়ুউ, মাছরাঙা, ঘুঘু, টিয়ে
কাঠবিড়ালি প্রজাপতির নিত্য সুর নাচ।

রংধনু সাতরং রাঙিয়ে দেয় জীবন
কাননে ফুলের বান ভ্রমরা গুঞ্জন তোলে
শিশুর মুখে প্রভুর আহা কি মধুর হাসি
এই বন্দরে নোঙর আজীবন ভালোবাসি।।


২৮ এপ্রিল, ২০২০।। শ্যামলী, ঢাকা।

Friday, April 17, 2020

দর্শন বিহনে - কামরান চৌধুরী

 কামরান চৌধুরী

কতদিন রাখিনি চোখ ঐ মিষ্টি দুটি চোখে
কতদিন রাখিনি হাত তোমার প্রিয় হাতে|
অবাক চাহনি হারিয়ে যায় সে পাখা মেলে
ফিরে পাব প্রাণ কফির আড্ডায় সুন্দর বিকেলে।
অব্যক্ত কথারা গোলাপ কুঁড়িতে প্রস্ফুটিত
ছুটে চলা চঞ্চল কিশোরী হরিনীর ন্যায়
ছটফট করি যেন প্রিয় সঙ্গ কামনায়
আর তুমি অবহেলা করে সরে সরে যাও।
রংধনু ছুঁতে, কৃষ্ণচূড়ায় রঙ মাখাতে
হাসিতে লাগানো বিদ্যুৎ চমক মেঘে ঢাকে।
বৈশাখী ঝড় শেষে আসবে শীতল বাতাস
অধরা তোমাকে কাছে ধরার পাবে প্রয়াস
চেনা অচেনা পথের তৃণ স্বাগত জানাবে
বিবর্ণ মলিন শহরটা প্রাণ খুঁজে পাবে।
আর কতদিন অপেক্ষায় প্রহর গুণবো
আর কত পূর্ণিমা অমাবস্যা পেরোতে হবে
কতটা ঋতু পেরিয়ে যাবে দর্শন বিহনে
আতঙ্কে আতঙ্কে কাটবে আমাদের জীবন।
জং ধরা শরীরের গাঁটে গাঁটে ধরে ব্যথা
ঘুচে যাবে কবে সামাজিক দূরত্বের বেড়া??
১৭ এপ্রিল, ২০২০ ।। শ্যামলী, ঢাকা

Monday, April 13, 2020

বর্ষবরণ - কামরান চৌধুরী


কামরান চৌধুরী

অদৃশ্য শত্রুরা ঘুরছে চৌদিকে
নতুন বর্ষ যে দাঁড়িয়ে চৌকাঠে।
বিবর্ণ মলিন ভয়ার্ত ধরণী
ভুলিনি তবুও বঙ্গাব্দ বরণী।
ভয়কে আমরা করবো যে জয়
বাঙালি নিয়েছে শপথ অভয়।
গৃহ মাঝে গড়ি আনন্দ ভূবন
মনে মনে সেথা অনিন্দ্য কানন।
মৃত্যু-ক্ষুধা-মন্দা, হৃদয় সুগন্ধা
উৎসব মুখর সকাল সন্ধ্যা।
নিয়েছি শপথ আনবো সুদিন
মায়ের, জাতির, বন্ধনের ঋণ।
আমন্ত্রণটা ভাই রইলো তোলা
শত্রু গেলে এসো, দুয়ারটা খোলা।
মিষ্টি পিঠা পুলি পায়েষ সেমাই
মিলবো আবার আড্ডায় সবাই।
দুরত্ব ঘুচুক তোমার আমার
অসুর নিধনে মিলবো এবার।
নব আলোতে অন্ধকার কাটুক
মঙ্গল সুরেতে ভূবন দুলুক।
১ বৈশাখ, ১৪২৭ ।। ১৪ এপ্রিল ২০২০ শ্যামলী, ঢাকা।

Sunday, April 12, 2020

করোনা ভেগে যাও - কামরান চৌধুরী

কামরান চৌধুরী

করোনা.. করোনা.. করোনা...
ধ্যাততেরি ছাই, কেন তুমি ছাড়োনা?
টেলিভিশন, পত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়ায়
দিনরাত ঘ্যানঘ্যানানি ভাল্লাগে না।
এটা কর, ওটা কর, বউয়ের প্যানপ্যানানি ভাল্লাগে না।
ছেলেপুলেদের কান্নাকাটি... ‘আমার সাথে খেলোনা,
কথা বলো, গল্পো বলো, ছবি আঁকোনা’...
আর কতক্ষণ সহ্য করা, বলতে পারো?
মনে হয়, ঘরের তালা খুলে, ছুটে যাই চলে।
রাস্তায় গলা ফাটিয়ে চিৎকার করি...
করোনা, এবারটা আমাদের ছাড়োনা।
বিশ্বটাকে ভয় দেখিয়ে, থামিয়ে দিলে গতির চাকা,
প্রেম পিরিতি ভালোবাসা, যেন এখন সিঁকেয় রাখা।
নিত্য কাজের তালিকাটা লন্ডভন্ড হয়ে গেল
দেহ-মনে বেঁধে বাসা অলসতা-বিষন্নতা এনে দিল।
আর কতকাল ঘরের মাঝে, চুপটি করে বসে রবো?
দোহায় লাগে এবার তুমি, আমাদেরকে মেরো না।
আল্লাহ খোদা ডাকছি কত
কেলিয়ে দাঁত হাসছো তত।
করোনা ও করোনা, দোহায় লাগে
এবার তুমি আমাদেরকে মেরো না।
বুদ্ধিটা যে ভোতা হলো, ঘরকন্না সঙ্গী হলো,
কাজ.. সঞ্চয়.. সেটাও গেলো..
জড়তা মূঢ়তা দেহমাঝে বেঁধে নিলো
এভাবেই কতদিন কাটবে বলো?
সৃষ্টির সেরা আমি। আমায় রুখতে চাও?
স্রষ্টা সহায় আছে, পারোতো ক্ষমা চেয়ে নাও।
কালবৈশাখী ঝড়ের মতো উঠবো নাকি জেগে?
দেখি আমার থেকে বাঁচতে তুমি, যেতে পারো কিনা ভেগে।।
১২ এপ্রিল, ২০২০২ ।। শ্যামলী, ঢাকা।।

Monday, March 30, 2020

যদি বেঁচে থাকি ।। কামরান চৌধুরী

যদি বেঁচে থাকি,
তবে, আবারও দেখা হবে
পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধ মাখা যাবে
অমৃতের স্বাদ নেবো সকলেই মিলে।
চারদিকে মৃত্যুর ইশারা
বেড়িয়ে যেওনা ঘর ছেড়ে কোনো ফাঁকে।
আলেয়ার হাতছানি সেথা
মনকে বোঝাও, সান্তনা দাও, ধৈর্য্ ধর
নিজের মাঝে নিজেই প্রতিরোধ গড়।
যদি বেঁচে থাকি
আবার যাবো তোমাদেরই কাছে
সাগর-পাহাড়, বিপনি বিতানে;
চেনা পথ, অচেনা শহর, অচেনা মানুষ খুশিতে বরণে।
ব্রহ্মপুত্র তীরে যাবো
বনজ্যোস্নায় নিরবতার শব্দ নেবো
দেখবো দু’জনে তারার মিলন।
ফাগুন হাওয়ায় ভাসবে তরী
হারাবে তখন কালের ঘড়ি।
যদি বেঁচে থাকি,
তবে আবার দেখা হবে।
প্রিয় সুখ উন্মাদনায় ভাসা যাবে।
বাঁশির সুরে ঘুম পাড়াবো-ভাঙাবো-ভাবাবো
ভালোবাসায় অঙ্গ ভরাবো।
বিকেলের ঝিরঝিরে বায়ু মাখবো দু’জন
দিগন্তের রঙিন আলোয় রাঙাবো জীবন।
যদি না বাঁচি, ধন-মান বিলিয়ে দেবো,
গচ্ছিত রেখে যাবো তোমার কাছে।
সুন্দর এ পৃথিবীর যা কিছু হয়নি দেখা
তোমার চোখে, আমার হয়ে দেখে নিও।
যদি বেঁচে থাকি, তবে, আবার দেখা হবে
অনন্তর পাশাপাশি চলা হবে ।।
৩০.৩.২০২০ ।। শ্যামলী, ঢাকা।।

Monday, March 16, 2020

একটি ছবির আত্মকাহিনি


মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হয়েছিল আমি তখন খুব ছোট
মাত্র আড়াই বছর বয়স, সবে মাত্র হাঁটা শিখেছি।
বাবা-মার হাত ধেের আলতো ছোঁয়ায় হেঁটে চলি,
মুখে জয় বাংলা স্লোগান  তুলি।
বড় বোন ভাইয়ের কোলে চড়ে পাড়াময় বেড়াই ঘুরে;
তাঁদের মুখেই দেশের মহান নেতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম শুনেছি
সেই থেকে তাঁর ছবিটি বুকে আঁকা।

জীবনে দু’বার রাস্তার পাশে জনস্রোতের মাঝে থেকে
তাকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।
গাড়িতে হাত নেড়ে নেড়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে
সকলকে অভিনন্দনের উত্তর দিয়েছিল। 
আর একবার দেখেছিলাম তাঁর
বাবার মৃতদেহ দেখার জন্য ছোট ভাই
শেখ নাসেরের বাড়িতে যাবার পথে। 
যখন আস্তে আস্তে বুঝতে শিখি
ভাইবোনদের সাথে স্কুলে যাই।
খুলনার রেল কলোনিতে আমি
বড় হতে থাকি ক্রমে ক্রমে।

পনের আগষ্ট উনিশ’শ পঁচাত্তর
প্রতিদিনের মত একইভাবে স্কুলে যেয়ে
শুনি ক্লাস হবে না আজ, সেই মহান নেতাকে
সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে নির্মমভাবে;
গোটা জাতি স্তব্ধ শোকে।

আমাদের সদর ঘরের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর একটি প্রতিকৃতি ছিল,
লোকে জানালো ওটা নামিয়ে ফেলতে
না হলে অসুবিধা হবে আমাদের।
ছবিটি নামিয়ে ট্রাঙ্কের মাঝে রাখা হলো,
বহুদিন সেটা জামা কাপড়ের নিচে চাপা ছিল।

এরই মাঝে শাসক পরিবর্তন হয়েছে অনেক
নব্বয়ের দশকে আমি পরিপূর্ণ যুবক,
এই বিশাল ব্যক্তিত্বকে নিয়ে অনেক কিছুই জেনেছি,
আমার ভেতরের সেই মহান নেতার ছবি এখনও অক্ষত।
হৃদয়ের মাঝে বিশাল বৃক্ষের মত
ডালপালা ছড়িয়ে বড় হয়।
আমাকে আশ্রয় দেয়, ছায়া দেয়; পথ চলার সাহস যোগায়।
এখন হয়েছে আলাদা ঘর, আলাদা পরিবেশ
গৃহের মাঝে সেই ছবিটি রাখতে
কেউ প্রতিহত করতে পারে না আমায়,
তবুও সেটা গৃহে রাখিনা, রাখার প্রয়োজনও নেই
ছবিটি আমার অন্তরের মাঝে গেঁথে আছে যে।।
কবি- কামরান চৌধুরী

বঙ্গবন্ধু তুমি


বাংলার ধূলি বাংলার জল
হবেনা বিলীন কভু অস্তাচল।

স্বাধীনতা সূর্য বিজয় নিশানে
বাঙালির গর্ব শতত মননে,  
চিরঞ্জীব তুমি মানব হৃদয়ে
হিমালয় উঁচু গৌরবে অভয়ে।

বঙ্গবন্ধু আজো, বাঙালি ভোলেনি
বজ্রকণ্ঠ কেউ দাবাতে পারেনি।
সৌর্য বীর্যে তুমি শিরায় শিরায়
শপথের পথে সালাম জানাই।

স্বর্ণাক্ষরে লেখা তোমার কথন
বিকশিত আজ সৌরভে কানন।।
কবি- কামরান চৌধুরী

শ্যামলী, ঢাকা ।।

Friday, February 7, 2020

ভালোবাসা

ভালোবাসা একটি শব্দ একটি স্বপ্ন
যে শব্দের চোরাবালিতে স্বপ্ন হারায়।
ভালোবাসা হৃদয় থেকে হৃদয়ান্তরে
স্নিগ্ধ ফুলে সুবাস মাখে, আবেশে রাখে।
কখনো সে দর্পনে মুখ অনিন্দ্য সুখ
দু’জনের মিলন পথে বিরহ দুখ।
দীপ্তি তার পঙ্খীরাজের পাখায় ভাসে
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরের আলোয় হাসে।
ভালোবাসা সে যেন এক অচিন সুখ
বুঝে নেয় মন শাখার ভাবনাটুক,
চোখ দেখে, বুকের মাঝে গন্ধ শুঁকেই
দিগন্তের ভাবনাহীন রেখা এঁকেই।
বুকের সে, প্রণয় ছিল তারই জন্য
দুরুদুরু বুক ঘরে নির্জন অরণ্য।
অরণ্যের একাকী পথে, হেঁটেছি সাথে
তুমি-আমি নিস্তব্ধতার সে গতিপথে।
সেই পথে কতই না আনন্দ ভ্রমণ
সুখস্মৃতি এ্যালবামে সাজানো যতন।
দূর্বা ঢাকা সবুজ মাঠে গল্প কথায়
চোখে চোখ চুড়ির শব্দ মন সীমায়।
স্পর্শ যাদু দেহ জাগায়, মন জাগায়
আহা! সেই সুখ বন্যায় কত সময়!
আত্মহারা যৌবন স্বপ্ন সৌধ চূড়ায়
তারপর স্বপ্নভঙ্গের ব্যথা জ্বালায়।
তবু, তবু, সে ভালোবাসা সব জীবনে
ফিরেফিরে আসুক না, জন্ম জন্মান্তরে।
পার হোক রাতের পর রাত নির্ঘুম
তারাময় আকাশ নীড়ে উদাসী চোখে।।

কবি - কামরান চৌধুরী 


Tuesday, January 14, 2020

কষ্টবোঝা


কষ্টগুলো বুকের মাঝে
মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে
কাঙালের মত অন্যকে বলে
চার আনা, আটআনা কুড়োতে পারিনা।
স্বার্থপরের মত ভাবি
কষ্টবোঝা কেন অন্যকে দিই।
যিনি দিয়েছেন কষ্ট
তিনি কি আমার উপর এতোই রুষ্ঠ !
কি করেছি পাপ
কষ্টগুলো ঘুরে ফিরে আসে বারংবার।
মেলাতে পারিনা হিসাব
শূন্য বৃত্ত ক্রমে ওঠে বেড়ে।
বাড়ছে বাড়ুক,
না পাওয়ার কষ্টগুলো
জমে জমে হিমালয় হোক
বোঝার চাপে হিমবাহ রূপেে
একদিন সে নেমে যাবেই
এ জীবনে, কিংবা মরণে।।

কবি:- কামরান চৌধুরী। 

ভালোবাসা


ভালোবাসা এক বিশ্বাস
জীবনের তা শ্বাস-প্রশ্বাস,
ভালোবাসা এক অনুভূতি
হৃদয়ে জড়ানো সুখের দ্যুতি।
ভালোবাসা একঝাক উচ্ছ্বাস
আবার কারো দীর্ঘশ্বাস।
ভালোবাসা নদীবুকে পাল তোলা তরী
মিছে সব, যদি না থাকে অর্থ কড়ি।

জীবনে সবাই ভালোবাসে
কখনও আগে, কখনো পরে,
কখন কাকে লাগবে ভালো
জানে না কেউ, জানবে নাকো।
তিল তিল ভালোলাগা জমে
ভালোবাসা হয় ক্রমে ক্রমে।
ভালোবাসা হলো মিলনাকাঙ্খা
যুগ যুগান্তরের তীব্র প্রতীক্ষা।
ভালোবাসা ভালোবাসা করে ছুটছে সবে
কবে তার দেখা পাবে জানবে কেমনে।
ভালোবাসার স্বপ্ন থাকুক সবার চোখে
তোমার ছবি যেমন আমার বুকটি জুড়ে।।

কবি: কামরান চৌধুরী

বাবাকে মনে পড়ে


বাবা, তোমার স্মৃতি মনে পড়ে, খুব মনে পড়ে।
আমরা করেছি কত খেলা, শুনেছি গল্প, কথা, গান,
তুমি দিয়েছো ভালোবাসা, করেছো যত্ন
শিখিয়েছ সত্য পথে চলা, ভালো হবার মন্ত্র।
যুগিয়েছ সাহস প্রতিবাদী হতে শেখা,
দেখিয়েছ সমাজের ভাল-মন্দ, আচার-আচরণ শিষ্টাচার।
তুমি আমার শক্তি-আদর্শ, প্রেরণার উৎস
আনন্দ বেদনায় তাই তোমাকেই মনে পড়ে।

তোমার হাত ধরেই চিনেছি প্রকৃতি, ফুল-ফল-লতা-পাতা
তোমার হাত ধরে করেছি ভ্রমণ কত পথ, দর্শনীয় স্থান, বন।
মেতেছি খেলায়, গিয়েছি মেলায় সকল উৎসবে,
তোমার কাছেই শিখেছি বিশ্ব মানবতা, মানুষকে ভালবাসা।
তোমার তিরোধান পাথর করে, স্তব্ধ করে মমপ্রাণ
তোমার স্মৃতি আন্দোলিত করে বুকের ভিতরে ভিতরে।
তুমি তো শুধু স্মৃতি ছবি নও
আজো গায়ে মাথায় স্নেহমাখা আদর বুলিয়ে যাও।
তোমার স্মৃতি আসলেই মনে শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে
মনে হয় তুমি আছো আমারই পাশে, খুব কাছে কাছে।
তোমার আশির্বাদী ছোঁয়া কপালে চন্দন টিপ হয়ে থাকে
অনন্ত চরাচরে যেখানেই থাকো শুধুই প্রার্থনা ভাল থেকো।।

কবি: ---কামরান চৌধুরী

নীলাচল


নীল আকাশের নীচে চলো যাই নীলাচলে
ছোট-বড় পাহাড় ঘিরে আছে যাকে।
পাহাড় গায়ে কলাগাছ, বাঁশঝাড়, বুনোগুল্মলতা
মিলে মিশে আছে তারা চির জনমের মিতা।
সবুজের পথ বেয়ে, এঁকে বেঁকে উঠে, শিখর চুঁড়ে
কিভাবে উঠিল পাহাড় ভূমি ফুঁড়ে !
দুচোখে বিস্ময় নিয়ে দেখি চারিধার
পলকে পলকে মুগ্ধতার আধার।
ছবির মত দূরে লোকালয় যায় দেখা
পাহাড় বুকে আদিবাসী গৃহ সাজানো সেথা
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তে আকাশে রঙের একি খেলা
মুগ্ধতায় ছুটে আসি দূর থেকে এই মিলন মেলায়।
পাহাড়ের গায়ে গায়ে মেঘের আস্তরণ
দিগন্তে মনের যথেচ্ছ বিচরণ,
নির্মল সমীরণ অচঞ্চল করে মন
ভাবনার সীমান্তে পাহাড়ের মত মূঢ়তায়
জীবনের ক্ষণকাল কাটে স্তব্ধতায়
মুগ্ধতায় মুগ্ধতায় অপার করুণাময়ের বন্দনায়।।

কবি:  কামরান চৌধুরী