Wednesday, June 17, 2020

অসুখ করেছে - মৌসুমী রে

গাছেদের আজ অসুখ করেছে -
সবুজ নেই ওদের পাতা,
বিবর্ণ পাতার করুণ আর্তনাদ
শুনে তোমরা কালা?
ঝরা পাতার মর্মর ধ্বনি
পাও না শুনতে?
ওদের যে বড় কষ্ট
শ্বাস নিতে পারছে না,
অনেক ডেকেছে তোমাদের -
আর পারছেনা ...
গভীর অন্ধকার ওদের চোখে

কেউ শুনল না ওদের আরতি,
ওরাই যে দু'হাতে আগলেছিল,
সভ্যতার ঝড়ে অন্ধ হয়ে
উন্নতির চাকা ছাড়া কিছু দেখলে না
ওরাই যোগাত তোমাদের অক্সিজেন,
ওরাই দেয় ছায়া পথিককে
তবু লোভ আর মিথ্যে প্রগতিতে
কুঠার হেনে গেছ ওদের বুকে
রক্তাক্ত গাছ তবুও জড়িয়ে মাটি
আঁকড়ে ধরেছিল শেকড় দিয়ে -
কিন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ
তুলে গেছে উচ্চ অট্টালিকা,
বানিয়েছে কারখানা,
উদযাপন করেছে প্রলয়ের

চাহিদার আকাশ ছুঁতে গিয়ে
আজ হারাচ্ছে জীবন,
ক্রুদ্ধ প্রকৃতি সগর্জনে
নেমেছে আজ ধ্বংসযজ্ঞে
প্রলয়ের এই সংহারী রুপের কাছে
আমরা শিশু, চির পরাজয়ী

করোনায় লণ্ডভণ্ড সব ব্যবস্থা - মানুনূর রশিদ

করোনা নিয়েই হয় তো এক সময় চারিদিকে খুলবে সব যে যাই বলোক আর যাই হোক না কেনো, স্কুল খুলবে,কলেজ খুলবে,খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়, খুলবে সব আজ বা কাল না হয় অন্য কোন দিন। কিন্তু সবাই মুখোশে মুখ ঢেকে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে, কেমন করে চলাবে পঠন-পাঠন, তা একেবারেই স্পষ্ট কেউ নয়। এটা করা যেতে পারে আবার হতেও পারে, আপাতত ক্লাসের ছাত্রসংখ্যা কমিয়ে দিয়ে, সিলেবাসের বোঝা একটু কমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলবে, হয় তো বা পৃথিবীর নানা দেশে দেশে। এতে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং কতটা বজায় থাকবে, সে নিয়ে সন্দেহ অনেকেরই মনে আছে। একটা নতুন কার্টুন দেখছিলাম, লকডাউনের পরে বাচ্চাদের স্কুল খুলেছে, বাচ্চারা সব মুখোশ পরে ক্লাসে এসেছে, কিন্তু ক্লাসের মধ্যেই লণ্ডভণ্ড সব ব্যবস্থা। কারো মাস্ক অন্য কেউ নিয়েছে পরে, আর যার মাস্ক সে দৌড়াচ্ছে তার পেছনে। কেউ তো মাস্ক দিয়ে নাক-মুখের বদলে ঢেকেছে চোখ, কারো আবার অভিযোগ, যে অন্য কেউ তার মুখোশ ‘সস্তা’ বলেছে। এটা নিছকই সোশ্যাল মিডিয়ার কৌতূক বলে উড়িয়ে দেওয়া সহজ নয় কিন্তু। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় দুলতে থাকবে অদূর ভবিষ্যতের দুনিয়া। কিন্তু এ ছাড়া উপায়ই বা কি আছে? আমেরিকার মতো দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ... ধরেই নিয়েছে যে প্রথাগত ক্লাসরুমের, পড়াশুনা চালানো সম্ভব নয় ২০২০ সালে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ভাবতে শুরু করেছে, ২০২১ সালটাও হয়তো এমনই যাবে। সম্বল তাই সবার স্মর্টফোট, ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট। করোনা লকডানউ থেকে পড়ানোর স্টাইলটাও যে ক্রমেই বদলে বদলে যাবে, প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্রুত গ্রাস করবে, সে বিষয়ে সন্দেহ কিন্তু কম নয়। চাই তবো শুভ মুক্তি হোক করোনা থেকে সুন্দর এই পৃথিবীর।

Friday, June 12, 2020

সেদিনটার অপেক্ষায় - মৌসুমী রে

গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বাজার করার,
বন্ধুকে জড়িয়ে ধরার,
অকারনে হেসে ওঠার,
দৌড়ে বাইরে যাবার
অপেক্ষা আর অপেক্ষা ...

ঘুরে বেড়াতে চাই বাসে, মেট্রোয়,
গ্যালোপিং ট্রেনে বসে স্টেশনে
না থেমে চলার সাক্ষী হব,
রাস্তার ধারের জামা কাপড়ের পশরায়
হঠাৎ একটু কুতূহলী দৃষ্টি দেবো ।

লাফাবো বোল্ডারের ওপর,
গাছের তলায় জিরাবো।
ঝাঁকামুটের মাথায় ঝাঁকি থাক,
টুংটাং আওয়াজে ঠেলাগাড়ি এগিয়ে যাক।

মন্দিরের গলিতে ফুল, মিষ্টি
বিক্রির ব্যস্ততা কতদিন দেখা হয়নি।
ডাবওয়ালার ডাব কাটাও
দেখা হয়নি অনেকদিন।

মাঠে আনন্দে লুটোপুটি করে
মাখবো ধুলো,
সেওপুরি খাওয়ার সময়
আবেশে চোখ বন্ধ করব।

ভিড় রাস্তায় জনঅরণ্যে
মিশে যাবো সেদিন
ভীষণভাবে অপেক্ষায় সেদিনটার ...
সেদিনটার ...।

************.************
মৌসুমী রে


কবি পরিচিতি

কবি মৌসুমী রে পৈতৃক নিবাস বার্নপুরপশ্চিম বর্ধমান। অধুনা মুম্বাইমহারাষ্ট্র নিবাসী স্থানীয় সংবাদপত্রে ফ্রিলান্স সাংবাদিক হিসেবে জীবন শুরু করে বিদ্যালয়ে অংক, অর্থনীতি এবং কম্পিউটার পড়ান কম্পিউটার প্রোগ্রামারের কাজ করেন চোদ্দ বছর। আপাতত স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে লেখার জগতের সাথে সক্রিয় ভাবে যুক্ত। ফেসবুকে লেখালেখি প্রায় দেড় বছর। নিয়মিত নানান পত্রিকায় কবির লেখা প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন সংস্থা থেকে সম্মান প্রাপ্ত। বাচিক শিল্পী হিসেবেও কাজ করছেন। সখ বই পড়া, আবৃত্তি করা, রান্না করা

Wednesday, June 10, 2020

এই বেশ আছি - অর্পিতা ঘোষ

দুপুরের রোদে দাঁড়িয়ে বার বার ইচ্ছে হতো,
 ছুটে কাছে যেতে...
কুলকুল করে বইতো ফল্গু বুকে,
ইচ্ছে হতো, বদ্ধ পুকুর থেকে বানভাসি হয়ে সমুদ্রে মিশতে
তুমি দেখোনি সে জলের ধারা, পড়োনি মনের কথা,
অধিকারে নেওনি টেনে বাহুপাশে।

আশ্রমের সন্ন্যাসীর মতো তাকিয়ে থাকতে স্নিগ্ধ চোখে।
হেরে গিয়ে, অবাধ্য হওয়ার চেষ্টা করেছি কতবার...
নরম দুচোখে , কি এক অমোঘ আকর্ষণী জাদু !!
ভুলে যেতাম সব ব্যথা।
অভিশপ্ত রাতগুলো থাকতো আঁধারে ঢেকে, 
জানালায় দাঁড়িয়ে, শুন্য দৃষ্টি চলে যেত দূর আকাশে
যেখানে, চাঁদ আর জ্যোৎস্না একাকার মিলেমিশে
কত সুখি ওরা, ভালোবাসার আলো ছড়ায় চারিদিকে।
বেলা গড়িয়ে আসে বিকেলের তটে
চৌকাঠ এখনো গন্ডি টেনে বসে,
নেই কোনো শোক, এই আছি বেশ!
মাঝির দেখা নেই,
নদীর ওপারে যাবো, 
নেবোনা সাথে কোনো দ্বেষ !!

---------------*---------------
অর্পিতা ঘোষ


লেখিকা পরিচিতি:--
অর্পিতা ঘোষের জন্ম নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর শহরে, বসবাস ও করে কৃষ্ণনগরে ।ছোট থেকেই সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ। স্কুলে পড়াশোনা করার পাশাপাশি লেখার ও ঝোঁক ছিল, ছোট থেকেই গল্প কবিতা লেখে,ও ছোটোদের গল্প  ছড়া লেখে। বিভিন্ন কাব্য গ্রন্থে , বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকাই , মাসিক পত্রিকায় ও দৈনিক খবরের কাগজে অনেক লেখা প্রকাশিত , বাংলাদেশের পত্রিকা ও দৈনিক কাগজে ও লেখা প্রকাশিত ।