নাদেরের মা যথারীতি আজও কাজে যাবার পথেই চার বছরের ছেলে শমু তার পথ আটকায়।আদতে নাদেরর কখোনও কোন চাওয়া বা বায়না থাকেনা। যত্তোসব আজব, জটিল বায়না মায়ের কাছে শমুর।নাদেরের মা আলতো করে ছেলেকে জোর করে সরিয়ে নাদেরের চোখে চোখ রেখে বলে যায়,
যেনো সে তার ভাইটার খেয়াল রাখে।নাদেরের মায়ের নাম জোবেদা।সে ঘরের বাইরে যেতে যেতে আঁচলে চোখ মুছে।
জোবেদাদের ইদের আমেজ শুরু হয় রাতে।বাসি,পচা, উচ্ছিষ্ট সেমাই, পোলাও কোর্মা দিয়ে। সে এভাবেই চলে আসছে বেশ অনেকদিন।কিন্তু জোবেদা একটা ব্যাপার খেয়াল করেছে যে নাদের কখনোই এসব খাবার ছুয়েও দেখেনি, কোনদিনও না। জোবেদা আশ্চর্য হয়,তার ছেলে দিনের পর দিন না খেয়ে থাকলেও ওসব খাবারের দিকে তাকিয়েও দেখে না।ভালো একটা ব্যাপার হলো- সে খাবারের জন্য কাদেও না।
সোহেল রহমান খানের বাসায় কাজ করছে সেই ষোলো বছর বয়স থেকে। সমাজের অত্যন্ত সম্মানিত লোক।জোবেদা মোটেও তার সাহেবকে ভয় পায় না,ঘেন্না করে। যদিও তার স্ত্রীর সাথে খুব ভাব জোবেদার।সোহেল সাহেবের স্ত্রীর কড়া হুকুম - একটা কাজেও যেনো কোন সমস্যা না হয়। অবশ্য সোহেল সাহেবের স্ত্রী শর্মিলার কথায় জোবেদা জীর্ণ মুখে সায় দেয়।
শর্মিলা বের হয়েছে এবং কোথায় গিয়েছে -তা জোবেদা জানে।পলাশের সাথে বিছানায় যাবাব আগেও বহুবার বিছানা ঠিক করে দিয়েছে। আজ যে গিয়েছে,তা জোবেদা জানে সহজে ফিরবে না।ইদ বলে কথা!
সোহেল সাহেব পেছন থেকে জোবেদার কোমর ধরতেই রাক্ষুসে চোখ নিয়ে তাকায়।খুন্তি টা নিয়ে শাসিয়ে চাপা গলায় বলে,জামাই বউ দুইজনে একইরকম অসুব্ব্যা। সোহেল সাহেব হায়েনার মতো হাসে।জাবেদা বলতেই থাকে। শেষে মুখে কাপড় গুজে চোখ ফিরিয়ে বলে, " আপনের পোলা যেইটা আমারে পেট বানাইয়া দিছেন, আপনের বউ দেইখাও না দেখার ভান কইর্যা ছিলো- সেই নাদের বড় হইছে। আপনে সরেন,আপনেরে দেহলে আমার ঘিন্না লাগে "।
- মোঃ কামরুজ্জামান বাবু
No comments:
Post a Comment